কম্পিউটার প্রসেসর কী?

 
কম্পিউটার প্রসেসর  কী?

কম্পিউটার যে যন্ত্রটি দিয়ে তথ্য ও উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পাদন করে, তাকেই প্রসেসর বলে। আগের দিনের কম্পিউটারের প্রসেসর গুলো ছিল অনেক বড়। কিন্তু ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে ক্ষুদ্র প্রসেসরের যাত্রা শুরু হয়।বর্তমানে প্রসেসর বলতে আমরা মাইক্রোপ্রসেসরকেই বুঝে থাকি।

 মাইক্রোপ্রসেসর
ল্যাপটপ, সার্ভার কিংবা যে-কোনো সাধারণ ডেস্কটপ কম্পিউটারের স্নায়ু কেন্দ্র একটিমাত্র সমন্বিত চিপ- মাইক্রোপ্রসেসর যা কম্পিউটারের সিপিইউ নামে পরিরিচত। প্রকৃতঅর্থে, মাইক্রোপ্রসেসর একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং প্রোগ্রামেবল এমন একটি গাণিতিক ইঞ্জিন যা ইন্সট্রাকশনের মাধ্যমে কম্পিউটারের যাবতীয় অপারেশন নিয়ন্ত্রণ এবং সম্পাদন করে। এই সমন্বিত চিপটি একটি ছোট, পাতলা সিলিকন যার সামান্য কয়েক বর্গমিলিমিটারে কয়েক-কোটি ট্রানজিস্টার থাকে।


মাইক্রোপ্রসেসরের জন্মকথা:
১৯৬০এর দশকের শেষে ও ১৯৭০ এর দশকের শুরুর দিকের ৩টি প্রকল্প হতে মাইক্রোপ্রসেসরের সূচনা হয়। এগুলি হলো, ইন্টেলের ৪০০৪, টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টসের টিএমএসে ১০০০ এবং গ্যারেট এআইরিসার্চ এর সেন্ট্রাল এয়ার ডাটা কম্পিউটার।

১৯৬৮ সালে গ্যারেটকে মার্কিন নৌবাহিনীর নতুন যুদ্ধ বিমান এফ-১৪ টমক্যাট এর জন্য উড্ডয়ন নিয়ন্ত্রক কম্পিউটার তৈরির কাজ দেয়া হয়। এর নকশা শেষ হয় ১৯৭০ সালে, মসফেট-ভিত্তিক চিপ ব্যবহার করে। এই নকশাটি শুরুর দিকের সব টমক্যাট বিমানে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু নৌবাহিনীড় গোপনীয়তা রক্ষার্থে ১৯৯৭ সালের আগে পর্যন্ত এর বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করতে দেয়া হয় নাই। এজন্য এই এমপি৯৪৪ চিপসেটের কথা অনেকটা অপরিচিত রয়ে গেছে।

১৯৭১ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টস ৪-বিটের টিএমএস ১০০০ তৈরি করে, এবং শুরুতে এটি ব্যবহার করে একচিপের একটি ক্যালকুলেটর তৈরি করে। ইন্টেলের ৪০০৪ চিপটি ১৯৭১ সালের ১৫ই নভেম্বর ফেডেরিকো ফ্যাগিনের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয় উল্লেখযোগ্য ৮-বিটের মাইক্রোপ্রসেসর।


মাইক্রোপ্রসেসরের শ্রেণী:
 মাইক্রোপ্রসেসর ধরণের ভিত্তিতে দুই ধরণের হয়ে থাকে। যেমন:

১. General Purpose মাইক্রোপ্রসেসর।
২. Dedicated মাইক্রোপ্রসেসর।

General Purpose মাইক্রোপ্রসেসর:
আমরা যে পেন্টিয়াম সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট ব্যবহার করি তা-ই General Purpose মাইক্রোপ্রসেসর। এটা সফটওয়্যারের ইন্স্ট্রাকশনে নানা রকমের কাজ করে থাকে। যেমন আমরা অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করার জন্য নানা রকম সফটওয়্যার ব্যবহার করি। বলা যায় VLC’র কথা। সেটা আমাদেরকে গান শুনায়। এই গান শুনানোর প্রসেসটা নিয়ন্ত্রন করে General Purpose মাইক্রোপ্রসেসর।

Dedicated মাইক্রোপ্রসেসর:
Dedicated মাইক্রোপ্রসেসর তার নিজের নাম ছাড়াও Application-Specific
Integrated Circuits (ASICs) নামেও পরিচিত। এগুলো বানানো হয় নির্দিষ্ট কোন কাজ করার জন্য। যেমন: নোকিয়া ফোনের যে কোন একটা নির্দিষ্ট মডেল
নিয়ন্ত্রন করে নির্দিষ্ট Dedicated মাইক্রোপ্রসেসর। আরো বিস্তাড়িতভাবে বললে; নোকিয়া ৩৩১০ ফোনসেট নিয়ন্ত্রন করে, সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরিকৃত Dedicated মাইক্রোপ্রসেসর। সে মাইক্রোপ্রসেসর ভিডিও গান দেখাতে পারবে না, কারন তা শুধু ৩৩১০ মডেলের জন্য তৈরি।

মাইক্রোপ্রসেসরকে কাজের ভিত্তিতেও দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:
১. ডাটাপাথ।
২. কন্ট্রোল ইউনিট।

 ডাটাপাথ:
মাইক্রোপ্রসেসর এর করা যে কোন ডাটা সম্পর্কিত আপারেশন এর এক্সেকিউশন
করে থাকে এই ডাটাপাথ। ডাটাপাথে আরো থাকে রেজিস্টার (রেজিস্টার
সম্পর্কে আমি বেশ কিছু পয়েন্ট জানি। এ নিয়ে অন্য লেকচারে আলোচনা করা হবে) যেগুলা ডাটা ইনপুট সাময়িক সময়ের জন্য স্টোর করে থাকে। উদাহরন হিসেবে বলা যায়, অ্যালগোরিদমিক লগিক ইউনিট’এ দুইটা সংখ্যা যোগ করতে গেলে তা ডাটাপাথ Execute করে থাকে।

কন্ট্রোল ইউনিট:
কন্ট্রোল ইউনিটের আরেকটা নাম হলো কন্ট্রোলার। ডাটাপাথ এর সমস্ত অপারেশন
নিয়ন্ত্রন করাই এর কাজ। কন্ট্রোল ইউনিটটা হল Finite State Machine
(FSM)। এর কারন হল, একটা Stage থেকে আরেকটা Stage এ যাওয়ার সিস্টেমটা নির্দিষ্ট করা আছে এই কন্ট্রোল ইউনিট’র জন্য। কি পরিমান Stage বা দশা’য় গিয়ে কি পরিমান কাজ করতে হবে তাও Fixed, কন্ট্রোল ইউনিটের জন্য। তাই এটা Finite State Machine (FSM)।

 কন্ট্রোল ইউনিটের তিনটা অংশ আছে। যেমন:

ক. Next-state logic।
খ. State memory।
গ. Output logic।

ক) Next-state logic:
Next-state logic এমন একটা সার্কিট যার কাজ হলো, মেশিনকে বুঝিয়ে দেওয়া পরবর্তী ধাপ কি হবে!

খ) State memory:
State memory এমন একটা সার্কিট যার কাজ হলো, বিদ্যুৎকে সিগনাল পাঠানো যে, Finite State Machine (FSM ) ইঙ্কলোডেড এবং তৈরি।

গ) Output logic:
Output logic হলো এমন একটা সার্কিট, যেটা জেনারেট করে থাকে প্রকৃত কন্ট্রোল
সিগনালগুলা ডাটাপাথ নিয়ন্ত্রনের জন্য।

Comments

Popular posts from this blog

সার্কিট ব্রেকার লাগানোর নিয়ম কি?

তারের গাঁয়ে যে তারের সাইজ RM দিয়ে প্রকাশ করা হয় এই RM মানে কি দেখুন

ক্যাপাসিটর কি?