রীলে (মতান্তরে রিলে, ইংরেজী শব্দ – relay ) যদিও ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্র বিশেষ, তবুও এর গুরুত্ব ইলেকট্রনিক্স এ কম নয়। ধরি, আমি একটা ফ্লিপফ্লপ তৈরি করেছি যা দিয়ে এলইডি জ্বলছে-নিভছে। এখন আমি যদি চাই যে এই ফ্লিপফ্লপ সার্কিটটি দ্বারা বড় কোনো বাতি স্বয়ংক্রিয় ভাবে জ্বালাবো আর নেভাবো তখন আমাকে এমন কোনো যন্ত্র/কম্পোনেন্টের সাহায্য নিতে হবে যা ঐ ছোট সার্কিটে সংযুক্ত করে এই বেশি শক্তির বাতি কে অন-অফ করতে পারি।

এই ধারাবাহিক লেখা পড়ে যা শিখতে পারবোঃ

রীলে ও স্ক্রু-ড্রাইভার

 কিঃ

এটি এক প্রকার ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক বা তড়িৎ চুম্বকীয় যন্ত্র বিশেষ। সাধারণ ভাবে যদি বুঝতে চাই তা হলে একে এমন ভাবে চিন্তা করা যেতে পারে- ছোট একটা সুইচ দিয়ে যখন আমরা একটা বাতি কে জ্বালাই তখন তার জন্য আমাদের সুইচে হাত দিয়ে তাকে অফ বা অন করতে হয়। অর্থাৎ কোনো বাহ্যিক একটা শক্তি লাগে সুইচ কে অন-অফ করতে। ঠিক তেমনি ভাবেই, কোনো  কেও অন বা অফ করতে এমনি বাহ্যিক শক্তি লাগে, তবে এ ক্ষেত্রে শক্তিটি বিদ্যুত চুম্বকীয় শক্তি। অর্থাৎ, এতে একটা কয়েল বা অস্থায়ী বৈদ্যুতিক চুম্বক থাকে যার মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিদ্যুত সরবরাহ করলে তা সুইচটিকে অন/অফ করতে পারে। কাজেই এর মধ্যে প্রধানত ২টি অংশ থাকেঃ
  1. সুইচিং অংশ
  2. বিদ্যুত চুম্বকীয় অংশ

এটি কত প্রকারঃ

বাজারে প্রচলিত রীলে সমূহ প্রধানত ৩ ধরনের
  1. SPST – Single pole single throw
  2. SPDT – Single pole double throw
  3. DPDT – Double pole double throw
আমরা আমাদের এই পাঠে বহুল প্রচলিত SPDT রিলে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

রিলে দেখতে কেমনঃ

আমরা নিচের চিত্রটিকে লক্ষ্য করলে একটি বাস্তব রিলে দেখতে কেমন হয় তা দেখতে পাবো-
এখানে খেয়াল করলে দেখবো যে এই এটির ৫ টি লেগ/পা/প্রান্ত আছে আর এর গায়ে ছোট ছোট অক্ষরে কিছু জিনিস লেখা আছে। আমরা এখন এই লেখা গুলোর অর্থ বোঝার চেষ্টা করবো।

লেখা গুলোর কোনটার মানে কিঃ

আমরা যদি একটু কাছে থেকে দেখি তা হলে লেখা গুলোকে এমন দেখতে পাবো যা দ্বারা রীলে’র বিভিন্ন মাণ কে নির্দেশ করছে-
লেখা গুলোর কোনটার মানে কি বুঝায়
আগেই বলেছি এটি গঠিত হয় ২টি ভিন্ন অংশ নিয়ে। এই লেখাগুলো দ্বারা এই ২টি ভিন্ন ভিন্ন অংশের ভোল্টেজ, কারেন্ট, রেজিস্টেন্স ইত্যাদি বিভিন্ন মাণ নির্দেশ করে।

আমার এই রীলে টি কতো ভোল্টেরঃ

উপরের চিত্র মোতাবেক যে এর গায়ে ২ রকমের ভোল্টেজ নির্দেশ করছে-
১০ এম্পিয়ার, ২৫০ ভোল্ট  / ১৫ এম্পিয়ার ১২০ ভোল্ট  – এর দ্বারা এটির আভ্যন্তরীন সুইচের সর্বোচ্চ ভোল্ট-এম্প সহ্য ক্ষমতা নির্দেশ করছে। অপরদিকে, তার ঠিক নিচেই লেখা ১২ ভোল্ট ডিসি (সাথে কিছু নাম্বার) লেখাটি দিয়ে বোঝাচ্ছে এই এর মধ্যে ব্যবহৃত বিদ্যুত চুম্বকীয় কয়েলটি ১২ ভোল্টের। অর্থাৎ, এই  এর বিদ্যুৎ চুম্বকীয় অংশে ১২ ভোল্ট কিংবা তার কিছু কম বেশি (১০%-২৫%) প্রয়োগ করলে  টি সক্রিয় হয়ে তার সুইচিং কার্য স¤পন্ন করতে পারবে। সাধারণত এগুলো আভ্যন্তরীণ ম্যাগনেটিক কয়েলের ভোল্ট ও তার সুইচিং ধরণ অনুসারে পরিচিত হয় যেমন ১২ ভোল্ট SPDT 
[নোটঃ সাধারণত রীলে গুলো তার ম্যাগনেটিক কয়েলের ভোল্ট ও তার সুইচিং ধরণ অনুসারে পরিচিত হয় ]
[টিপসঃ বাজারে  সাধারণত এর লেগ/পিন সংখ্যা দ্বারা বেশি পরিচিত যেমন SPDT  – ৫ পিন; DPDT  – ৮ পিন পভৃতি। সুতরাং বাজারে গিয়ে ১২ ভোল্ট ৫ পিন  চাইলে দোকানী SPDT  দিবে। (এর কয়েলের ভোল্ট এর সাথে সুইচের পিন সংখ্যা + কয়েলের পিন সংখ্যা বলতে হবে। যেমনঃ ১২ ভোল্ট ৫ পিন  )

Comments

Popular posts from this blog

সার্কিট ব্রেকার লাগানোর নিয়ম কি?

তারের গাঁয়ে যে তারের সাইজ RM দিয়ে প্রকাশ করা হয় এই RM মানে কি দেখুন

ক্যাপাসিটর কি?